ক্রোয়েশিয়া ভিসা দাম কত ২০২৪

ক্রোয়েশিয়া দক্ষিণ পশ্চিম ইউরোপের একটি জনপ্রিয় দেশ। দেশটি জনপ্রিয় হওয়ার অন্যতম কারণ পরিছন্নতা ও উন্নত জীবনযাপন। ৫৬,৫৯৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দেশটির জনসংখ্যা তুলনামূলক কম। ক্রোয়েশিয়ায় অসংখ্য প্রাকৃতিক পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। এই পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে প্লিটভাইসার সিন অন্যতম। পর্যটন কেন্দ্রটি দেখলে মনে হয় প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। তবে এটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্যের একটি স্থান।

বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ এই পর্যটন কেন্দ্র ভ্রমণে এবং পড়াশোনা সহ কাজের উদ্দেশ্যে ক্রোয়েশিয়া ভিসা তৈরির জন্য আবেদন করছে। এছাড়া অনেকেই উন্নত জীবন যাপনের জন্য ক্রোয়েশিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। ভিসা তৈরির খরচ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কারণে ওঠানামা করে। বর্তমানে সরকারি সংস্থার আওতায় ক্রোয়েশিয়া ভিসা তৈরি করতে বর্তমানে ন্যূনতম ৫ লাখ টাকা এবং এজেন্সির দ্বারা তৈরি করতে ন্যূনতম ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে।

ক্রোয়েশিয়া ভিসা পাওয়ার উপায়

ভিসা বলতে মূলত নাগরিকত্ব বিহীন বৈধ ভাবে কোন দেশে থাকার অনুমতি পত্র কে বোঝানো হয়। ক্রোয়েশিয়া উন্নতশীল একটি রাষ্ট্র। ক্রোয়েশিয়াতে অবৈধ ভাবে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বৈধ ভাবে ক্রোয়েশিয়া প্রবেশ করার একমাত্র উপায় হল বৈধ ভিসার সাহায্যে প্রবেশ করা। ক্রোয়েশিয়া ভিসা সরকারি ও বেসরকারি দুই ভাবেই পাওয়া যায়।

ক্রোয়েশিয়া ভিসা দাম কত

বর্তমানে অন্যান্য দেশের ভিসা তৈরীর খরচের তুলনায় ক্রোয়েশিয়া ভিসা তৈরীর খরচ তুলনামূলক বেশি। ক্রোয়েশিয়া বিভিন্ন ধরনের ভিসা পাওয়া যায়। যেমন কাজ করার জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, পড়াশোনা করার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা ইত্যাদি। ভিসার ধরন অনুযায়ী ভিসা তৈরীর খরচ আলাদা হয়ে থাকে। বর্তমানে ক্রোয়েশিয়া ভিসা পাওয়া তুলনামূলক কঠিন।

তবে বিভিন্ন সংস্থার সাহায্যে সহজে ভিসা তৈরি করা যায়। এছাড়া ক্রোয়েশিয়ায় অবস্থানরত ব্যক্তির সাহায্যে ক্রোয়েশিয়া ভিসা তৈরি করা যায়। ক্রোয়েশিয়া ভিসা তৈরি করতে বর্তমানে সর্বনিম্ন প্রায় ৬ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। তবে সরকারি সংস্থার সাহায্যে সর্বনিম্ন প্রায় ৫ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ৬ লাখ টাকায় ভিসা তৈরি করা যায়।

ক্রোয়েশিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম

২০২৩ সালের পহেলা জানুয়ারি ক্রোয়েশিয়া সেনজেন ভুক্ত দেশের তালিকায় যুক্ত হয়েছে। সেনজেন ভুক্ত দেশে প্রচুর পরিমাণে কাজ পাওয়া যায়। ক্রোয়েশিয়া কাজ করার জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা রয়েছে। ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তৈরির প্রসেস পূর্বের তুলনায় কিছুটা সহজ করা হয়েছে। সরকারি ভাবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তৈরি করতে ন্যূনতম ৫ লাখ টাকা থেকে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়।

কেননা এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার কিছুটা খরচ বহন করে। অপরদিকে বেসরকারি ভাবে ক্রোয়েশিয়া কাজের উদ্দেশ্যে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তৈরি করতে ন্যূনতম ৬ লাখ টাকা থেকে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। অর্থাৎ ক্রোয়েশিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তৈরি করতে ন্যূনতম ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বাজেট রাখতে হবে।

ক্রোয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসার দাম

একটি জাতিকে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর জন্য শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। বাংলাদেশে অসংখ্য মেধাবী স্টুডেন্ট রয়েছে। অনেকেই বিদেশে পড়াশোনা করার ইচ্ছা পোষণ করে থাকে। ক্রোয়েশিয়া অনেক বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। ক্রোয়েশিয়া পড়াশোনা করার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা রয়েছে। স্টুডেন্ট ভিসার সাহায্যে বাংলাদেশী নাগরিক ক্রোয়েশিয়া পড়াশোনার জন্য যেতে পারবে।

বর্তমানে ক্রোয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসা তৈরি করতে ন্যূনতম প্রায় ৩ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। তবে কোন স্টুডেন্ট যদি ক্রোয়েশিয়ার কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্কলারশিপ পায় তাহলে ক্রোয়েশিয়া যাওয়ার খরচ অনেকটাই কমে যাবে। এক্ষেত্রে প্রায় ১ লাখ টাকা থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত কম খরচে ক্রোয়েশিয়া যেতে পারবে।

ক্রোয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসার দাম

আয়তনের দিক থেকে বিশ্বে ক্রোয়েশিয়ার অবস্থান ১২৬তম। আয়তনে ছোট হলেও দেশটিতে অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট পর্যটন কেন্দ্রীয় পাশাপাশি কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা হয়েছে অসংখ্য পর্যটন নগরী। ক্রোয়েশিয়ার এ সকল পর্যটন নগরী ভ্রমণ করার জন্য টুরিস্ট ভিসার প্রয়োজন। বর্তমানে ক্রোয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসা তৈরি করতে ন্যূনতম ২ লাখ টাকা থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হচ্ছে।

ক্রোয়েশিয়া কৃষি ভিসার দাম

কৃষি প্রতিটি দেশের প্রধান চালিকাশক্তি। বিশ্বের প্রতিটি দেশ কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। ক্রোশিয়াতে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করা হয়। ফসল উৎপাদনের কাজে কৃষকের যোগান দিতে প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কৃষি ভিসায় ক্রোয়েশিয়া উপস্থিত হয়। বর্তমানে কৃষি ভিসা তৈরি করতে ন্যূনতম প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়।

ক্রোয়েশিয়া কাজের বেতন কত

বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে যে সকল বাঙালি ক্রোয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয় তাদের অধিকাংশ জীবিকা নির্বাহের জন্য ক্রোয়েশিয়া যায়। ক্রোয়েশিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত দেশ হওয়ায় কাজের বেতন তুলনামূলক বেশি হয়ে থাকে। ক্রোয়েশিয়াতে সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সর্বনিম্ন বেতন কাঠামো রয়েছে।

বর্তমানে ক্রোয়েশিয়ায় সর্বনিম্ন মাসিক বেতন ৮৪০ ইউরো যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১ লক্ষ ৫,৮৪০ টাকা হয়ে থাকে। ক্রোয়েশিয়া সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সর্বনিম্ন বেতন স্কেল ৮৪০ ইউরো হলেও একজন অভিজ্ঞ শ্রমিক প্রতি মাসে ন্যূনতম ১ হাজার ইউরো থেকে ১২০০ ইউরো পর্যন্ত ইনকাম করতে পারে।

ক্রোয়েশিয়া ভিসা আবেদনের নিয়ম

বৈধ ভাবে ক্রোয়েশিয়া যেতে একটি বৈধ ভিসা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে চাইলেই ভিসা তৈরি করা যায় না। ক্রোয়েশিয়া ভিসা তৈরি করতে প্রথমে ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। ক্রোয়েশিয়া ভিসার আবেদনের জন্য ক্রোয়েশিয়া সরকার দ্বারা অনুমোদিত বাংলাদেশী এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করতে হবে। এছাড়া অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে সহজেই ক্রোয়েশিয়া ভিসার আবেদন করা যায়।

ক্রোয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে

শিল্প সাহিত্য ও খাদ্য অভ্যাসেও ক্রোয়েশিয়া দেশটির রয়েছে দীর্ঘ ঐতিহ্য। দেশটিতে পৌঁছাতে বর্তমানে লাখ লাখ টাকা খরচ করতে হয়। জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিমানের টিকিট মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে পূর্বের তুলনায় ক্রোয়েশিয়া যাওয়ার খরচ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্রোয়েশিয়া যেতে ভিসা তৈরীর খরচ সহ বিমান ভাড়া এবং আনুষাঙ্গিক কাগজ পত্র মিলিয়ে প্রায় ৮ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়।

ক্রোয়েশিয়ার সব থেকে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। দেশটি ফুটবলের মাধ্যমেই বিশ্ববাসীর নিকট পরিচিতি পেয়েছে। তবে বর্তমানে ক্রোয়েশিয়া ইউরোপীয় রাষ্ট্র হওয়ায় এখানে প্রচুর কাজের সুযোগ রয়েছে। এই কাজের জন্য অনেক বাংলাদেশী ক্রোয়েশিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। তবে বর্তমানে ক্রোয়েশিয়া ভিসা তৈরিতে অনেক দুর্নীতি হয়ে থাকে। তাই ভিসা তৈরিতে অধিক সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top