সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা ২০২৪

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড মানব জীবনের জীবনযাত্রার এক অন্যান্য পার্টনার। লেনদেনের জগতে ক্রেডিট কার্ড বর্তমানে সবার কাছে অধিক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বর্তমানে সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের সাহায্যে প্রতি দিনের সকল প্রকারের লেনদেন সহ বিভিন্ন ধরনের সেবা পাওয়া যায়। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্রেডিট কার্ড তৈরি করায় এতে অর্থ নিরাপদ থাকার পাশাপাশি লেনদেনের ক্ষেত্রে অধিক নিরাপত্তা পাওয়া যায়। বর্তমানে ক্রেডিট কার্ডের সাহায্যে আন্তর্জাতিক লেনদেন পর্যন্ত করা যাচ্ছে।

বাংলাদেশের অন্যান্য ব্যাংক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সিটি ব্যাংক অন্যতম। সিটি ব্যাংক প্রবাস থেকে লেনদেনের পাশাপাশি বর্তমানে ক্রেডিট কার্ডের সুযোগ সুবিধা প্রদান করছে। গ্রাহকদের ভোগান্তি কমানোর জন্য ইতিমধ্যে সিটি ব্যাংক বেশ কয়েকটি ক্রেডিট কার্ড লঞ্চ করেছে। এ সকল ক্রেডিট কার্ড দিয়ে শপিং ডাইনিং ইএমআই সুবিধা সহ অসংখ্য সেবা উপভোগ করা যায়। বলা যায় ক্রেডিট কার্ড বর্তমান সময়ের ডিজিটাল লেনদেনের একটি অন্যতম মাধ্যম।

সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড কি

ক্রেডিট কার্ড লেনদেনের সহজ মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়। সকল প্রকার পণ্য ক্রয় থেকে শুরু করে প্রতিদিনের যাবতীয় লেনদেন ক্রেডিট কার্ডের সাহায্যে সম্পন্ন করা যায়। ক্রেডিট কার্ড হলো এক বিশেষ ধরনের লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত প্লাস্টিক কার্ড যা ব্যবহারকারীদের কে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রদান করে থাকে। সাধারণত অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্থানীয় ব্যাংক থেকে এ সকল ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করা হয়ে থাকে। গ্রাহকদের

সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার নিয়ম

চাইলেই ক্রেডিট কার্ড কিনতে পাওয়া যায় না। বেশ কিছু নিয়মের মধ্য দিয়ে ক্রেডিট কার্ড অর্জন করতে হয়। সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য প্রথম শর্ত হলো সিটি ব্যাংকে একটি নির্ধারিত একাউন্ট থাকতে হবে। সিটি ব্যাংকে একাউন্ট না থাকলে নতুন করে একাউন্ট খুলে ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে।

এই আবেদন বেশ কিছু নিয়মের মধ্য দিয়ে সংগঠিত হয়ে থাকে। প্রথমে নিকটস্থ সিটি ব্যাংকের শাখায় উপস্থিত হয়ে ক্রেডিট কার্ড প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করতে হবে। উক্ত ব্যাংক শাখার প্রতিনিধি ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য পেশ করবে। প্রতিনিধি মহোদয়ের বর্ণিত পন্থায় আপনার পছন্দের ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে।

সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা

পূর্বে সিটি ব্যাংকের একাউন্ট থেকে টাকা উঠাতে হলে ব্যাংকে যাওয়ার প্রয়োজন হতো। তবে ইতিমধ্যে সিটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন প্রকার ক্রেডিট কার্ড প্রদান করে থাকে। যে ক্রেডিট কার্ড গ্রাহক তার সুবিধা অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারে। তবে সকল গ্রাহককে ক্রেডিট কার্ড প্রদান করা হয় না। ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য বেশ কিছু যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন। কেবল এ সকল যোগ্যতা অর্জনকারী গ্রাহকরাই ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা পাবে।

  • আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই ন্যূনতম ১৮ বছর থেকে ৭০ বয়সের মধ্যে হতে হবে।
  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে।
  • আবেদনকারীর একটি নির্দিষ্ট আয়ের স্থায়ী উৎস থাকতে হবে এবং আবেদনকারীর পেস্লিপ বা আইটিআর দেখাতে হবে।
  • আবেদনকারীর একটি গ্রহণযোগ্য CIBIL স্কোর থাকতে হবে এবং CIBIL স্কোর না থাকলে সিটি ব্যাংক শাখায় যোগাযোগ করতে হবে।
  • চাকরিজীবির ক্ষেত্রে স্যালারি সার্টিফিকেট এবং ৩ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স ও ৩ মাসের ব্যাংক ট্রানজেকশন স্টেটমেন্ট।

সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডে প্রযোজ্য চার্জ

বর্তমানে সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড দ্বারা সরাসরি ব্যাংক শাখায় উপস্থিত না হয়ে যে কোন জায়গা থেকে এটিএম মেশিনের সাহায্যে টাকা উত্তোলন করা যায়। ক্রেডিট কার্ডে টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে কিছু চার্জ প্রযোজ্য হয়ে থাকে। যেমন নগদ উত্তোলনের চার্জ উত্তোলিত পরিমাণের 2.5% বা 500 টাকা, যেটি কম হয়।

সীমা ছাড়িয়ে গেলে চার্জ উত্তোলিত পরিমাণের 2.5% বা 500 টাকা, যেটি কম হয়। বিলম্বে অর্থ প্রদানের জন্য চার্জ ২০০০ টাকা পর্যন্ত ব্যালেন্স ২০০০ থেকে ৭৫০০ টাকা। এছাড়া ৬০০ টাকা পর্যন্ত ব্যালেন্স ৭৫০০ থেকে ১৫০০০ টাকা ও ৯৫০ টাকার উপরে ব্যালেন্স এবং ১৫০০০ – ১৩০০ টাকার সমান। সর্বোপরী চেক করুন বাউন্স বা ইসিএস রিটার্ন প্রতি বাউন্সে ৫০০ টাকা।

ক্রেডিট কার্ডের জন্য অনলাইন আবেদনের নিয়ম

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা থাকলে ক্রেডিট কার্ডের জন্য অনলাইনে আবেদন কার্যক্রম সম্পন্ন করা যায়। এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম সিটি ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ক্রেডিট কার্ড অপশনে ক্লিক করে আপনার পছন্দ অনুযায়ী ক্রেডিট কার্ড নির্বাচন করুন।

ক্রেডিট কার্ড নির্বাচন করা হয়ে গেলে পরবর্তী স্টেজে‘ এখনই আবেদন করুন’ বিকল্পে ক্লিক করুন। অতঃপর আবেদন পত্রের প্রয়োজনীয় সকল তথ্য প্রদান করুন। আবেদন পত্রে যোগাযোগের তথ্য, পেশাগত তথ্য এছাড়াও ঠিকানা যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে। আবেদনের ক্ষেত্রে আবেদন করার সময় ফর্মে আপনার ফোন নম্বর শেয়ার করুন।

ক্রেডিট কার্ডের জন্য অফলাইনে আবেদনের নিয়ম

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের জন্য অফলাইনে আবেদন করার ক্ষেত্রে সরাসরি নিকটস্থ ব্যাংক শাখায় উপস্থিত হতে হবে। ব্যাংক শাখায় উপস্থিত হয়ে ক্রেডিট কার্ডের আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে। ব্যাংক শাখায় কর্মরত কর্মকর্তার কাছ থেকে উক্ত ফরম সংগ্রহ করা যায়।

আবেদন ফরম হাতে পেলে তাতে উল্লেখিত সকল তথ্য যথাযথভাবে প্রদান করতে হবে। আবেদন ফরম পূরণ করে ব্যাংক কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করতে হবে। অতঃপর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার আবেদন পত্র যাচাই বাছাই করে সকল তথ্য সঠিক থাকলে অতিশীঘ্রই ক্রেডিট কার্ডের অনুমোদন দিবেন।

ক্রেডিট কার্ডের আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সমূহ

অফলাইনে অর্থাৎ সরাসরি ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে ক্রেডিট কার্ডের আবেদন করতে আবেদন ফরমের সাথে বেশ কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হবে। চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে কিছু ভিন্নতা থাকলেও অধিকাংশ কাগজ পত্র প্রায় একই। আবেদন ফরমের সাথে নির্ভুল কাগজপত্র জমা দিতে হবে। অন্যথায় ক্রেডিট কার্ড অনুমোদন ব্যাহত হবে।

  • চাকরিজীবীদের জন্য সর্বশেষ সেলারি সার্টিফিকেট বা সর্বশেষ ৩ মাসের পে স্লিপ এবং অফিস আইডি কার্ড কপি।
  • সর্বশেষ ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও কপি ল্যাব প্রিন্ট ছবি এবং ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর কপি।
  • ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স এবং যদি পার্টনারশিপ ব্যবসা হয় তাহলে পার্টনারশিপ চুক্তি নামার কপি।
  • বিজনেস কার্ড এবং ই টিন সার্টিফিকেট ও সর্বশেষ ১২ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
  • ল্যাবপ্রিন্ট ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।

সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা সমূহ

বাংলাদেশ সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে রয়েছে আকর্ষণীয় অনেক সেবা। সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটা সহ বিভিন্ন ঋণ উত্তোলন ও সহজে পরিষদ করা যায়। নিকটস্থ সিটি ব্যাংকের যেকোনো শাখা থেকে ক্রেডিট কার্ড সংগ্রহ করা যায়। সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে।

  • বিরামিন বা ইচ্ছামত এ কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটা করা সহ যে কোনো সময় লেনদেন সম্পূর্ণ করা যায়।
  • প্রতিটি এটিএম মেশিন এবং সিটি ব্যাংকের ইপিওএস এ নগদ টাকা তোলার জন্য খুব সহজে ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও ইমার্জেন্সি খরচের জন্য এখানে যথার্থ টাকা রাখা যায়।
  • ব্যাঙ্কগুলি পেমেন্টের জন্য সু*দ-মুক্ত ইএমআই (সহজ মাসিক কিস্তি) সময় প্রদান করে।
  • বিরামহীন অনলাইন ক্রয় এবং লেনদেন আপনি সময়মত বকেয়া পরিশোধের মাধ্যমে ক্রেডিট স্কোর উন্নত করা যায়।

সিটি ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশের একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক। সিটি ব্যাংক আনুষ্ঠানিক ভাবে ১৯৮৩ সালের ২৭ শে মার্চ তাদের কার্যক্রম শুরু করে। সিটি ব্যাংকের অধীনে পূর্বে ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা না থাকলেও বর্তমানে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রায় ১০ লাখের অধিক ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছে। যা ব্যবহারে গ্রাহকরা সন্তুষ্ট হয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top