আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা ২০২৪

একজন বাংলাদেশী নাগরিক চাইলেই আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা তৈরি করতে পারেন না। আমেরিকার ভিসা পেতে হলে অবশ্যই বেশ কিছু যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। আর উচ্চশিক্ষা অর্জনের উদ্দেশ্যে বিদেশ ভ্রমণের তালিকার মধ্যে আমেরিকার নামটি সবার প্রথম তালিকায় রয়েছে।

কারন উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে ইচ্ছুক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষ গন্তব্য হিসেবে বিবেচিত হয়। তাই বাংলাদেশের স্টুডেন্ট ভিসা তৈরি তালিকার ক্ষেত্রে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ১০,৫৯৭ জন উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য আমেরিকা পৌঁছে গিয়েছেন। এবং বর্তমানে আন্তর্জাতিক উচ্চশিক্ষা গ্রহণের প্রবণতা আরব বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তবে মনে রাখবেন আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া যেমন কঠিন তেমনি পরিপূর্ণ যোগ্যতা থাকলে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া তার থেকেও সহজ। বৈধ পাসপোর্ট, IELTS দক্ষতা সার্টিফিকেট এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তির লেটার সহ বেশ কিছু যোগ্যতার বিনিময়ে আমেরিকার ভিসা পাওয়া যায়।

আমেরিকার ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা ২০২৪

ইউনাইটেড স্টেট অফ আমেরিকা যা অনেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলে চিনে থাকেন। বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী এবং অন্যতম শক্তিশালী একটি দেশ। অর্থনৈতিক দিক থেকে শুরু করে, সামরিক, বেসামরিক এবং উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রেও আমেরিকা অনেক বেশি উন্নত এবং আকর্ষণীয় ও শক্তিশালী।

এ ছাড়াও এই আমেরিকা হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির একটি দেশ। যা বিশ্বের সকল দেশের নাগরিকদের জন্য রয়েছে আধুনিক ও উন্নত জীবন ব্যবস্থা, কর্মসংস্থানের অফুরন্ত সুযোগ ও উদ্যোক্তাদের জন্য অনুকূল পরিবেশ। তবে এদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিশ্বের যে কোন শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে আবাসস্থল, উচ্চমানের শিক্ষা, গবেষণার জন্য অফুরন্ত সুযোগ।

তবে এই আমেরিকায় উচ্চ শিক্ষার জন্য পৌঁছাতে চাইলে অবশ্যই স্টুডেন্ট ভিসায় প্রবেশ করতে হবে। এবং বেশ কিছু যোগ্যতা এবং শর্তের বিনিময়ে স্টুডেন্ট ভিসা তৈরি করতে হবে। তবে স্টুডেন্ট ভিসা ছাড়াও আপনি চাইলে আমেরিকায় বেশ কিছু ভিসার বিনিময়ে পৌঁছাতে পারবেন।

আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা

বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী রয়েছেন যারা আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন দালাল এবং এজেন্সিদের সাথে যোগাযোগ করে থাকেন। তবে জেনে রাখা ভালো, বেশ কিছু শর্তের বিনিময় ছাড়া আপনি কখনোই আমেরিকার ভিসা তৈরি করতে পারবেন।

অর্থাৎ স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য আপনি যোগ্য না হলে কখনোই কোন এজেন্সি বা দালালের সাহায্য নিয়ে ভিসা তৈরি করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে যে সকল যোগ্যতার প্রয়োজন হয় তা হচ্ছে একটি বৈধ পাসপোর্ট, শিক্ষাগত যোগ্যতা সর্বশেষ সার্টিফিকেট। এ ছাড়াও কয়েকটি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট যা নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ

  • একটি বৈধ পাসপোর্ট।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট
  • আমেরিকান কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তির লেটার
  • শিক্ষার্থীর বয়স ১৪ থেকে ৭৯ বছরের মধ্যে হতে হবে
  • টিউশন, থাকা-খাওয়া, এবং অন্যান্য খরচ বহন করার সামর্থ্যের প্রমাণ (ব্যাংক স্টেটমেন্ট, স্পন্সরশিপ চিঠি, স্কলারশিপ)
  • ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট (IELTS, TOEFL,GRE)
  • শিক্ষা শেষে দেশে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা ও কর্মজীবনের লক্ষ্য
  • মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
  • পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট

আমেরিকাতে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য কি যোগ্যতা লাগে

অনেক বাংলাদেশী শিক্ষার্থী রয়েছেন যারা ইংরেজিতে কোনরকম দক্ষতা না থাকার কারণে স্টুডেন্ট ভিসা পেয়ে থাকেন না। তবে একজন শিক্ষার্থী চাইলে আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অনুযায়ী IELTS করে নিতে পারেন।

এবং অর্জন করে নিতে পারেন নূন্যতম ৫.৫ থেকে ৮.০ স্কোর পর্যন্ত। কারণ ইংরেজিতে কথা বলা, শোনা,পড়া এবং লেখার দক্ষতা মূল্যায়ন করা হয়। এছাড়াও এই যোগ্যতা ছাড়াও বেশ কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য গুরুত্বের সাথে তৈরি করে নিতে হয়। যেমনঃ

  • স্টুডেন্ট ভিসার এপ্লিকেশন ফর্ম।
  • একটি বৈধ পাসপোর্ট।
  • IELTS একাডেমিক সার্টিফিকেট।
  • ভোটার আইডি কার্ড।
  • বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন।
  • মেডিকেল রিপোর্ট ফিট।
  • পাসপোর্ট এর মেয়াদ সর্বনিম্ন 6 মাস বা তার বেশি।
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
  • কোভিড 19 ভ্যাকসিনের নথি।

আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা খরচ ২০২৪

বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ভিসা পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে ভিসা তৈরি করার জন্য অবশ্যই সবার প্রথম আবেদন করতে হয়। তবে আবেদন করতেই আপনার ন্যূনতম ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা আবেদন ফি খরচ হবে। এবং আমেরিকাতে স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে নূন্যতম বিমান ভাড়া হবে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা।

এক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থীর স্কলারশিপ, আবেদনসহ বেশ কিছু ভিসা বিবেচনা করে সকল খরচ আনুমানিক হিসেবে ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা নির্ধারণ করা হয়। যেখানে অন্যান্য ভিসায় আমেরিকায় পৌঁছাতে ১৫ থেকে ১৮ লক্ষ টাকা খরচ হয়। তবে আপনি যদি চেষ্টা করে থাকেন পরিপূর্ণভাবে, সে ক্ষেত্রে আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসার খরচ হতে পারে সর্বোচ্চ ৬ থেকে ৮ লক্ষ টাকা।

আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পেতে কি কি কাগজপত্র লাগে

নিচে উল্লেখিত বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্রের দ্বারা আপনি আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা তৈরির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এবং কাগজপত্রের দ্বারা বেশ কিছু পদক্ষেপ এবং প্রক্রিয়া অবলম্বন করলে আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ IELTS স্কোর সার্টিফিকেট। এছাড়া ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও অফার লেটার সহ আরো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।

  • স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন ফরম
  • IELTS স্কোর সার্টিফিকেট
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট
  • বৈধ পাসপোর্ট এর ফটোকপি
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ
  • অফার লেটার
  • ভোটার আইডি কার্ড বা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন ফটোকপি
  • চারিত্রিক/নাগরিক সনদপত্র
  • করোনা ভ্যাকসিনের টিকা কার্ড
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
  • মেডিকেল রিপোর্ট
  • ঠিকানার প্রমাণস্বরুপ গ্যাস/পানি/বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি।

আমেরিকায় স্টুডেন্ট ভিসায় কি কাজ করা যায়

হ্যাঁ আপনি আমেরিকায় স্টুডেন্ট ভিসায় গিয়ে কাজ করতে পারবেন। তবে যে বিশ্ববিদ্যালয় আপনি পড়াশোনার জন্য যাচ্ছেন। সেখানে তিন মাসের বেশি অথবা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অনুপস্থিত থাকলে আপনার স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল হয়ে যেতে পারে। তাই কাজ করার পাশাপাশি অবশ্যই আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয় উপস্থিত থাকার চেষ্টা করতে হবে।

আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসার আবেদনের নিয়ম

অনলাইনে ন্যূনতম ১৪ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা ফি দিয়ে আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসায় আবেদন করতে পারবেন। তবে আবেদন করার জন্য বেশ কিছু নিয়ম পালন করতে হয়। যে নিয়মগুলো আপনি নিজে নিজে করতে পারেন। অথবা কোন দালাল বা এজেন্সির সাহায্য নিতে পারেন।

তবে আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসার জন্য অবশ্যই আপনাকে এই ( https://bd.usembassy.gov/bn/visas-bn/)  ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে আবেদন করতে হবে। এই ওয়েব সাইটে মোবাইল দিয়ে হোক অথবা কম্পিউটার বা ল্যাপটপ দিয়েই ঘরে বসে আবেদন করে নিতে পারবেন।

আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পেতে কতদিন লাগে?

একটি দেশের ভিসা তৈরি করতে ঠিক কতদিন সময় লাগে তা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব না। কারণ বিচার তৈরি করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু প্রক্রিয়া, শর্ত ও ধাপের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তবে কেউ যদি আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা তৈরি করতে চান।

এক্ষেত্রে আপনার ন্যূনতম ১ থেকে দুই মাস সময় লাগতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে ১ মাসের মধ্যে আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা তৈরি হয়ে যায়। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে দুই মাস বা তার থেকেও কম সময়ের মধ্যে তৈরি হয়ে যায়।

বর্তমানে আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া খুবই কঠিন। তবে সমস্ত কাগজপত্র ঠিক থাকলে অবশ্যই আপনি যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। এবং এক থেকে দুই মাসের মধ্যে আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পেয়ে যাবেন। তবে সকল ভিসা তৈরি করার ক্ষেত্রে অবশ্যই দালালদের থেকে সাবধান থাকবেন। এবং অবশ্যই পরিচিত কোন দালালের সাহায্য নিন। আর আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা তৈরি করার পূর্বে অবশ্যই জেনে নিন কি কি কাগজপত্র লাগে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top