বাংলাদেশের ব্যাংক প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর সোনালী ব্যাংক সবচেয়ে বড় ব্যাংক প্রতিষ্ঠান। আস্থার অপর নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে সোনালী ব্যাংক। বাংলাদেশের সব থেকে বিশ্বস্ত এবং নির্ভরযোগ্য ব্যাংক প্রতিষ্ঠান সোনালী ব্যাংক। বর্তমানে সোনালী ব্যাংক অনলাইনের মাধ্যমে একাউন্ট খোলার সুবিধা প্রদান করছে। অনলাইন ব্যতীত সরাসরি ব্যাংকে গিয়েও সহজে একাউন্ট খোলা যাচ্ছে।
গ্রাহকদের সঠিক ভাবে সেবা প্রদান করাই সোনালী ব্যাংকের মূল লক্ষ্য। পূর্বে সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট খোলা অনেক কষ্টসাধ্য ছিল। গ্রাহকের কষ্টের কথা মাথায় রেখে সোনালী ব্যাংক অনলাইন সেবা চালু করেছে। যার ফলে ঘরে বসে সহজে অল্প সময়ের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট খোলা যাচ্ছে। বাংলাদেশের ব্যাংক প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে সোনালী ব্যাংক বর্তমানে সকলের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে।
সোনালী ব্যাংক একাউন্টের প্রকারভেদ
বর্তমানে সোনালী ব্যাংক প্রতিষ্ঠান কয়েক ক্যাটাগরির একাউন্ট সেবা প্রদান করে আসছে। প্রত্যেকটি একাউন্টের ধরন অনুযায়ী সেবা ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। সেভিংস একাউন্ট ও কারেন্ট একাউন্ট এবং অনলাইন একাউন্ট এই তিন ধরনের একাউন্ট সোনালী ব্যাংকে সব থেকে বেশি পরিমাণে খোলা হয়।
সেভিংস একাউন্ট
সেভিংস ইংরেজি শব্দ এর বাংলা অর্থ সঞ্চয় করা। সোনালী ব্যাংক সঞ্চয় করার বিষয়ে অনেক তৎপরতা বজায় রাখে। টাকা সঞ্চয় করার জন্য সোনালী ব্যাংক আলাদা ভাবে সেভিংস একাউন্ট শাখা তৈরি করেছে। সোনালী ব্যাংকের সেভিংস একাউন্টে গ্রাহকরা নিশ্চিন্তে অর্থ সঞ্চয় করতে পারে।
কারেন্ট একাউন্ট
সোনালী ব্যাংকের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা হচ্ছে কারেন্ট একাউন্ট শাখা যার অর্থ বর্তমান বা চলমান একাউন্ট। মূলত অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা কারেন্ট একাউন্ট গুলোতে লেনদেন করে থাকে। যারা নিয়মিত সোনালী ব্যাংকে লেনদেন করে তাদের জন্য কারেন্ট একাউন্ট শাখা তৈরি করা হয়েছে। কারেন্ট একাউন্টে টাকা উত্তোলন ও জমা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
অনলাইন একাউন্ট
সোনালী ব্যাংকের অনলাইন একাউন্ট মূলত সব সময় লেনদেন করার জন্য ব্যবহার করা হয়। সোনালী ব্যাংকের অনলাইন একাউন্টে যখন ইচ্ছা টাকা জমা ও উত্তোলন করা যায়। এছাড়া সোনালী ব্যাংক প্রতিষ্ঠানের অনলাইন একাউন্টে টাকা সঞ্চয় করার মত সুবিধা পাওয়া যায়।
সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
বর্তমানে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট বিভিন্ন উপায়ে খোলা যায়। সব থেকে সহজে অনলাইনের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলা যায়। এছাড়া সরাসরি ব্যাংকে স্বশরীরে উপস্থিত হয়েও একাউন্ট খোলা যায়। সোনালী ই সেবা অ্যাপস ব্যবহার করেও সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট খোলা যায়।
সোনালী ই সেবা অ্যাপস ব্যবহার করে অনলাইনে একাউন্ট খোলার নিয়ম
বর্তমানে সব থেকে সহজ উপায়ে সোনালী ই-সেবা অ্যাপস ব্যবহার করে সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট খোলা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সবার আগে স্মার্টফোনের সাহায্যে গুগল প্লে স্টোর থেকে সোনালী সেবা অ্যাপসটি ডাউন*লোড এবং ইনস্টল করতে হবে। অতঃপর অ্যাপসে প্রবেশ করে আপনার পছন্দের একাউন্ট শাখা নির্বাচন করুন।
শাখা নির্বাচন করে এন আই ডি কার্ডের নম্বর, নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার সহ যাবতীয় তথ্য প্রদান করে এন আই ডি কার্ড স্ক্যান আপনার ছবি তুলতে হবে। অতঃপর অ্যাপস এর নির্দেশ অনুসারে ওটিপি ভেরিফাই করে একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় ফি প্রদান করুন। একাউন্ট খোলা কমপ্লিট হলে ব্যাংক থেকে এস এম এস এর মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
সোনালী ব্যাংকে সরাসরি একাউন্ট খোলার নিয়ম
বর্তমানে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট অনলাইনের পাশাপাশি সরাসরি ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে খোলার সুবিধা রয়েছে। সরাসরি একাউন্ট খোলার জন্য নিকটস্থ সোনালি ব্যাংক শাখায় উপস্থিত হয়ে ব্যাংকে কর্মরত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে আবেদন ফরম সংগ্রহ করুন। অতঃপর ফরমটি যথাযথ ভাবে পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সহ ব্যাংকে জমা দিন।
সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে কি কি কাগজপত্র লাগে
বর্তমানে সোনালী ব্যাংক নিয়ম কানুনের ক্ষেত্রে পূর্বের তুলনায় অনেক অনেক বেশি কঠোরতা অবলম্বন করে থাকে। সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে বেশ কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হবে। অতঃপর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে সঠিক মনে হলে একাউন্ট ওপেন করে দিবে।
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি।
- বানিজ্যিক ভাবে অথবা কোন প্রতিষ্ঠানের নামে একাউন্ট খুলতে প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স ও টিন একাউন্টের কপি জমা দিতে হবে।
- যার নামে একাউন্ট খুলবেন তিনি মারা গেলে টাকা উত্তোলনের অধিকার পাবে একজন নমিনি লাগবে।
- দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি জমা দেওয়ার সাথে সাথে নমিনের পাসপোর্ট সাইজের এক কপি ছবি জমা দিতে হবে।
- এর পাশাপাশি নমিনির জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন কার্ড ব্যাংক কর্মকর্তার নিকট জমা দিতে হবে।
- আবেদনকারী কে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে নতুবা সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলা যাবে না।
- একাউন্ট খোলার সময় ব্যাংকে আপনাকে ৫০০ টাকা জমা দিতে হবে যে টাকাটি আপনার একাউন্টে জমা হবে ফিক্সড ডিপোজিট হিসেবে জমা থাকবে।
সোনালী ব্যাংক একাউন্ট চেক করার নিয়ম
বর্তমানে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট ২ টি উপায়ে চেক করা যায়, একটি এস এম এস এর মাধ্যমে এবং অপরটি সরাসরি ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে। সরাসরি ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে একাউন্ট চেক করার জন্য কর্মরত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে হবে। এবং এস এমএস এর মাধ্যমে সিঙ্গেল একাউন্ট চেক করার জন্য মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে SBL <Space> BAL এবং পাঠিয়ে দিতে হবে ২৬৯৬৯ এই নাম্বারটিতে।
অতঃপর ব্যাংক থেকে এসএমএস এর মাধ্যমে আপনার সিঙ্গেল একাউন্টের ব্যালেন্স জানিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া সিঙ্গেল একাউন্ট চেক করার জন্য আপনাকে আপনার মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে। একের অধিক অর্থাৎ মাল্টিপল একাউন্ট একাউন্ট চেক করতে চান তাহলে মোবাইল অপশনে গিয়ে লিখতে হবে SBL <Space> BAL1 ও SBL <Space> BAL2 এবং পাঠিয়ে দিতে হবে ২৬৯৬৯ নাম্বারে। অতঃপর পূর্বের ন্যায় এস এম এসের মাধ্যমে আপনার ব্যালেন্স জানিয়ে দেওয়া হবে।
সোনালী ব্যাংক একাউন্ট অনলাইনে খোলার সুবিধা
এক সময় সকাল সকাল ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে একাউন্ট খুলতে হতো। তবে বর্তমানে প্রযুক্তির কল্যাণে ঘরে বসে স্মার্টফোনের সাহায্যে অনলাইনে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। অনলাইনের মাধ্যমে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কোন প্রকার কাগজ প্রিন্ট করে ব্যাংকে জমা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ফলে সময় ও শ্রম এবং টাকা উভয়ই বেঁচে যায়।
ব্যাংক বর্তমান সময়ের সব থেকে বড় সঞ্চয় প্রতিষ্ঠান। অর্থ সঞ্চয় থেকে শুরু করে লেনদেনের সকল কার্যক্রম বর্তমানে ব্যাংকের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে। সঞ্চয় ও লেনদেনের জন্য সোনালী ব্যাংকে ভিন্ন ভিন্ন শাখা রয়েছে। এই ভিন্ন ভিন্ন শাখায় একাউন্ট খোলার জন্য ভিন্ন ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করতে হয়।
পিক বাংলা ডট কম হলো বিভিন্ন ধরনের ছবি সংগ্রহের ওয়েবসাইট। এখানে আমরা বিভিন্ন মাদ্ধম থেকে সংগ্রহকৃত সুন্দর সুন্দর এইচডি ছবি শেয়ার করে থাকি।